ভূত ও পিশাচ কাহিনী ছোট গল্প আদমখুর পর্ব ২

আপনার লিংকটি তৈরী হচ্ছে

---------

 আপনার লিংকটি তৈরী হচ্ছে


ব্রিঃদ্রঃ গল্পটিতে কপিরাইট রয়েছে। (সংগ্রহিত)
⚠
#Warning : দুর্বল হৃদয়ের হলে পোষ্টটি Skip করতে পারেন।
গল্পঃআদমখুর
 পর্ব ২
পরদিন সকালে বাসায় ধুপধাপ শব্দে রেজার ঘুম ভাঙ্গে। যেন মনে হচ্ছে বাসার ভেতরে টর্নেডো বয়ে যাচ্ছে!!
রেজা আড়মোড়া ভেঙে মোবাইলে তাকিয়ে দেখে ১১ টা বাজে। আজ শুক্রবার তাই অফিস নেই, দিয়াও ওকে ডেকে তুলেনি।। সে আওয়াজের সুত্র ধরে বিছানা থেকে উঠে রুমের বাইরে গিয়ে দেখে ফাইজা চলে আসছে। আর এই ধুপধাপ আওয়াজ হচ্ছে সে দিয়াকে রান্নার কাজে হেল্প করছে। হেল্প তো নয় যেন কোমড়ে গামছা বেধে যুদ্ধ করছে....!!
রেজা কিছু না বলে কয়েক মুহূর্ত ফাইজার কান্ড দেখে যায়।
ফাইজা কড়াইয়ে কিছু একটা ভাজছে। মুখে পড়ে রাখছে হেলমেট আর দুই হাতে প্লাস্টিকের বোতল। আর দাঁড়িয়ে আছে কড়াই থেকে ২ হাত দূরে। চামচের সাথে বেধে নিয়েছে একটা লাঠি সেটার সাহায্যে দূর থেকেই কড়াইয়ে কিছু একটা উল্টে পাল্টে দিচ্ছে।।
রেজা হাসবে না কাঁনবে কিছু বুঝতে পারছেনা। এই মেয়েটা আস্ত একটা উজবুক!! নেহাত-ই দিয়ার বেস্ট বান্ধবী নয়তো কানের নিচে একটা লাগিয়ে দিতাম,, আর পরে বিটিবির মতো কানে ঝিরিঝিরি শুনতো।।
রেজাকে অমন ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে দিয়া বলে;
ভাইয়্যু উঠে গেছিস??
রেজা স্তম্ভিত ফিরে পেয়ে বলে ;
হুম বোন উঠে গেছি। তা আজ কি ইস্পেশাল রান্না হচ্ছে কিচেনে শুনি?? যে এমন যুদ্ধের পোশাক পরে তোর বান্দরী উফস চরি বান্ধুপী রান্না করছে।।
রান্না বললে ভুল হবে তাকে দেখে তো মনে হচ্ছে রীতিমতো কুংফু ক্যারাটে প্রেক্টিস করছে...!!
দিয়া মুচকি হেসে চোখ রাঙিয়ে বলে ভাইয়্যু আমার বেস্ট বন্ধুপীর সাথে একদম এমন আচরণ করবিনা কিন্তু। আমি কিন্তু দেখে যাচ্ছি তুই রেগুলার ইচ্ছে করে আমার ফাইজু কে খোচাখোচি করিস!!
কিচেন থেকে ফাইজা বললো বাদ দে দোস্ত!! 
তোর ভাইয়্যু মাঝে মাঝে এমন ভীমরতি ধরে যে বুঝবার পারিনা হাইস্যা দিমু না কাইন্দা দিমু!!
রেজা মুখ কালো করে বলে;
এই এই কি ভীমরতি ধরি আমি!! বেশি বলছো কিন্তু,, "যত বড় আম নয় তত বড় আটি!"
দিয়া বলে কি বলছিস?? আম আর আটি কই থেকে আসলো??
রেজা বলে ; গাছে থেকে আসে।। তুই ছোট মানুষ তুই চুপ থাক তুই বুঝবি না এসব!!
দিয়া মুখে আঙুল দিয়ে চুপ থাকার ভান ধরে.!!
ফাইজা বলে; তুই কিছু বলিস না দোস্ত এর চেয়ে ভালো তুই অতি শীগ্রই একটা ভালো মানসিক ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ কর।। কারণ যত দিন যাচ্ছে অবস্থা ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে।। এমন ভাবে চললে তো পথে ঘাটে যে কাউকে যত্রতত্র কামড়ে দিতে পারে।।
রেজা বললো : কি??
এই এই এই মেয়ে?? তুমি কি ইন্ডাইরেক্টলি আমাকে পাগল বলছো? আমার মাথায় দোষ ধরেছে বুঝাচ্ছো?? আমি পথে ঘাটে মানুষকে কামড়ে দিবো??
ফাইজা বলে; "এমন না যে সব কথা নির্দিষ্ট কাউকে উদ্দেশ্য করেই বলতে হবে। কিন্তু আমার কথা আর জুতার মাপ যদি আপনার পায়ের খাপে খাপে মিলে যায়!! তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনিই সেই সিন্ডারেলা!!"
দিয়া মুখ টিপে হেসেই যাচ্ছে ওদের ঝগড়া দেখে!!
এদিকে রেজা ফুলেফেঁপে কলা গাছ হয়ে বসে আছে। কিছু বলতে চেয়েও আর বললো না ঠাস করে রুমের দরজা বন্ধ করে ভেতরে চলে যায়।।
ফাইজা দিয়ার দিকে কাচুমাচু মুখ করে তাকাতেই দুই বান্ধবী অট্টহাসিতে ফেটে পরে...!!!
**
দিয়া আর ফাইজা এবার অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী।।
ফাইজা দিয়াদের বাসার কাছেই থাকে। সে হলো দিয়ার ক্লোজ ফ্রেন্ড, ক্লোজ বললে ভুল হবে বলতে পারেন ক্লোন ফ্রেন্ড!! 
ক্লোজ বলতে এমন ক্লোজ যে তারা একই রকম জামা, জুতা, ব্যাগ, হেয়ার স্টাইল, খাতা, কলম, এমনকি একই স্টাইলে কথাবার্তা ও বলে। মানে একে অপরের কার্বন কপি পুরো!!
ফাইজার একটা অভ্যাস হলো ও ঘুম থেকে উঠেই দিয়াদের বাসায় চলে আসবে। এখানেই দিয়ার সাথে নাস্তা করবে এখান থেকেই এক সাথে রেডি হয়ে ভার্সিটি যাবে।
ফাইজা তার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। ওর বাবা মা সরকারি কর্মকর্তা। সকালে উঠেই অফিসে চলে যান আসেন বিকেলে। তাই ফাইজা দিয়ার বাসায় থাকলেও তাদের কোনো আপত্তি হয়না। বরঞ্চ দিয়াদের বাসায় ফাইজার থাকাটা উনারা সেইফ মনে করেন।।
হাসাহাসি শেষ করে দুই বান্ধবী রান্নার কাজে লেগে যায় আবারও। কারণ আজ শুক্রবার সব মজার মজার আইটেম রান্না হবে। আর আজ হচ্ছে একটা স্পেশাল দিন, আজ রেজার জন্মদিন। তাই রেজা কে সারপ্রাইজ করতেই তার পছন্দের সব রান্না করছে।
ফাইজার কোনো ভাই বোন নেই সে রেজা আর দিয়াকেই নিজের ভাইবোন মনে করে। রেজার সাথে যতই ঝগড়া করুক কিন্তু মন থেকে বড় ভাইয়ের মতোই ভালোবাসে!!
রেজাও এদিকে কম যায়না। ইচ্ছে করে পায়ে পাড়া দিয়ে দিয়ে ঝগড়া বাধাবে। কিন্তু ফাইজা আর দিয়াকে একই নজরে দেখে। শুক্রবার অফ ডে বিকেলে তিনজন বাইরে ঘুরতে যায়। তারপর সারা বিকেল ঘুরে ঘুরে রাতে বাইরে রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে একসাথে বাসায় ফেরে।। দিয়ার জন্য কিছু কিনলে হুবহু সেইম জিনিসটাই ফাইজার জন্যও কিনে।।
** 
রেজা রুমে ঢুকেই ফাইজার কথা মনে করে হেসে দেয়। যতই রাগ দেখাক ঝগড়া বাধাক ফাইজাকে অনেক আদর করে। কারণ একমাত্র ফাইজা ই আছে যে তার বোনের মুখে হাসি ফুটাতে পারে। ফাইজা না থাকলে হয়তো তার বোনটা ডিপ্রেশনে কবেই মারা যেতো!!
রেজা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।
ফ্রেশ হওয়ার সাথে সাথে সাওয়ার ও সেড়ে নেয়। কারণ আজ জুম্মা বার আজ মসজিদে যেতে হবে নামাজে। আর সবচেয়ে বড় কথা আসার সময় এই দুই পেত্নীর জন্য যদি জিলাপি নিয়ে না আসে তাহলে এরা ওকে পিটিয়ে ভুত বানিয়ে দিবে।।
একবার তো জিলাপি একটা বেশি আনতে যেয়ে সেই দৌড়ানি খাইছে। অল্পের জন্য গনপিটুনী খায়নি।। মার খেতে খেতে বেঁচে গেছে।। তারউপর একটা স্যান্ডেল ও স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে। কিন্তু কি আর করার ঘরে এমন সাকচুন্নি মার্কা দুইটা বোন থাকলে, শুধু স্যান্ডেল নয় মানুষের মার ও খেতে হয়!!
রেজা পাঞ্জাবি টুপি পড়ে নিয়েছে। গায়ে আতর মেখে হাতে জায়নামাজ নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়ে।।
রান্নাঘরের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দেখে ফাইজা আর দিয়া খিকখিক করে হেসেই যাচ্ছে। কিছু একটা নিয়ে আলাপ করে গায়ে ঢলে পড়ছে, আর একে অপরের গায়ে কিল ঘুসি মারছে।
রেজা ভাবে এই মেয়েগুলো এমন কেন!?
আজব প্রাণী তোহ!! কথা বলবি বল গায়ে থাপ্রাথাপ্রি করবি কেন? এটা কোন ধরনের জংলী মার্কা আচরণ!?
রেজার ভাবনার মাঝেই দিয়া বলে উঠে..!! 
কিরে ভাইয়্যু তুই রেডি?
রেজা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুঝায়।।
আচ্ছা ঠিক আছে সাবধানে যাস। আর মনে আছে তোহ? আসার সময় আমাদের জন্য কতগুলো জিলাপি নিয়ে আসিস কিন্তু!! 
হ বইন আমার মনে আছে। প্রতিবার তোদের "কতগুলো" জিলাপির ধান্ধায় আমার জুতা, স্যান্ডেল, টুপি, এসব হারাই যায়।।
তাই আজ খালি পায়েই যাবো। যাতে জুতা না হারায়!!
দিয়া ফিক করে হেসে দিয়ে বলে;
সে তুই যেভাবেই আনিস। আসার সময় মনে করে নিয়ে আসবি নয়তো তুই আজ বাসায় ঢুকতে পারবিনা। আর আজ কি কি রান্না করেছি জানিস??
তোর পছন্দের বিরিয়ানি, গরুর কলিজা, লাউ দিয়ে চিংড়ি, ডিম ভাজি, সর্ষে ইলিশ আর.....!!
আর বলিস না বোন আমার পিত্ত থলিতে পানি এসে গেছে!! যখন তখন অজু নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এক কাজ কর তোরা খাবার চেকে দেখিস না, আমি আসলে আমি খেয়ে তারপর তোদের রিভিউ দিবো নে। তোরা পরে খাইস কেমন?? 
ফাইজা বলে এহ!! আইছে রিভিউ দিতে!!
আমরা কি রিভিউ চাইছি আপনের থেকে??
রেজা বলে না চাইলেও রিভিউ দেওয়া বড় ভাই হিসেবে আমার কর্তব্য। আর বড় ভাই হিসেবে আমার একটা দ্বায়িত্ব আছে তাই নাহ!?
দিয়া বলে বেশি বকবি না। যা নামাজে যা দেরি হয়ে যাচ্ছে। আমরা খাওয়ার পর থাকলে অল্প একটু তুই খাইস।।
কিহ!! অল্প একটু!? 
তোরা খাওয়া শুরু করলে আমার নসিবে কি আর খাবার জুটবে? তোরা তো একাই পুরোটা সাভার করে দিবি।। তারচেয়ে তোরা আমার জন্য অপেক্ষা কর আমি আসলে খাওয়া হবে।।
ফাইজা বলে, কি আমাদের আপনি রাক্ষস মিন করলেন? আমরা খাওয়া শুরু করলে সব খেয়ে নেই??
রেজা বলে; 
"পড়লো কথা হাটের মাঝে 
যার কথা তার কানে বাজে !!"
ফাইজা মুখ ফুলিয়ে বলে ভালো হবে না কিন্তু ভাইয়া!!
দিয়া চোখ রাঙানী দিয়ে বলে;
ভাইয়্যু তুই যাবি এখান থেকে??
রেজা বলে হ্যাঁ যাচ্ছি যাচ্ছি কিন্তু খবরদার আমাকে রেখে খেলে কিন্তু তোদের পেট খারাপ করবে। এমন বদ দোয়া দিবো যে হাগ"তে হাগ"তে মরবি।।
দিয়া বলে ছিহ!! যাহ ভাইয়্যু তুই আসলেই একটা খাটা'শ!! যা তা বলিস!! যা এখান থেকে।।
রেজা ভিলেনি হাসি দিয়ে বেরিয়ে পরে বাসা থেকে মসজিদের উদ্দেশ্যে...!! 
এদিকে আমরা দেখতে পাই...!! 
সেই প্রাসাদের একটা অন্ধকার রুমে গুটিসুটি মেরে বসে আছে এক যুবক।। হাতে পায়ে শেকল পড়ানো..!! 
সে বিরবির করে কিছু বলছে কিন্তু স্পষ্ট ভাবে শোনা যাচ্ছে না। তার চোখ দুটো গাড় সবুজ।। আর সেই চোখে খেলা করছে কয়েক ফোটা অশ্রু!!
হাতে একটা ছবি নিয়ে সেটায় এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। যেন চোখে চোখে কথা হচ্ছে তাদের।।
তখনই সেখানে উপস্থিত হয় একটা মেয়ে। তার হাতে খাবারের প্লেট, প্লেট ভর্তি মাংস নিয়ে সে এগিয়ে আসে যুবকের দিকে। তারপর তার সামনে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে;
ভাইয়া খাবার খেয়ে নে!!
এভাবে উপস করলে তুই তো বেশি দিন বাঁচবি না। বাঁচতে হলে অন্তত তোকে অল্প করেও খেতে হবে।।
ছেলেটি অল্প একটু হেসে বলে;
যার জন্য বাঁচতে চাই সেই তো জানে আমি মৃত তাহলে আমার বেঁচে থেকে লাভ কি?
পাগলামো করিস না ভাইয়া!!
তোকে বাঁচতে হবে। তুই ছাড়া এই রাজ্য ধংশ হয়ে যাবে।। তোকে আমাদের জন্য বাঁচতে হবে।।
হাহ কোন রাজ্যের কথা বলছিস তুই?
যে রাজ্য আমার থেকে আমার প্রিয়জন কে কেড়ে নিয়েছে? সেই রাজ্য? নাকি সেই রাজ্য যে শুধু চায় মানুষের তাজা মাংস!??
চলবে......!???
তাইবা

🔴 Steps to Get Link 🔗

Click Ad

1. Click on Ad ⬆
2. Wait for 5 seconds
3. Come Back Here

Ad Clicked! Please wait 5 seconds...


--------