ভূত ও পিশাচ কাহিনী ছোট গল্প #হত্যাকারীর_রহস্য #পর্ব_৬

আপনার লিংকটি তৈরী হচ্ছে

---------
ব্রিঃদ্রঃ গল্পটিতে কপিরাইট রয়েছে। (সংগ্রহিত)
⚠ #Warning : দুর্বল হৃদয়ের হলে পোষ্টটি Skip করতে পারেন।

#হত্যাকারীর_রহস্য
#পর্ব_৬




থানায় ইফতেখার আর জাহাঙ্গীরের কথা হচ্ছে-
-জাহাঙ্গীর,  অপূর্বর ব্যাপারে আরেকটু খোজ নেওয়া দরকার। 
-স্যার, আপনি বলার আগেই আমি খোজ নিয়েছি।অপূর্ব অর্পিতা সহ কয়েকটা মেয়ের সাথেও মাহফুজের মতো একই কাজ করেছিল।  
-তাহলে ত আমরা এটা ধরাণা করতেই পারি যে, কি*লার সেসব ছেলেদের কে টার্গেট করছে যারা কিনা মেয়েদের সাথে প্রতারণা করেছে। প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েদের সাথে সম্পর্ক করেছে। 
-হ্যা, স্যার আমারো তাই মনে হচ্ছে।  তবে, 
-তবে কি?
-তবে আপনি যে বললেন টার্গেট করছে,  এব্যাপারে আমি একমত না।
-কেন? কি বলতে চাচ্ছো ক্লিয়ার করে বলোতো। 
-ভালো করে খেয়াল করুন স্যার,  অপূর্বর কপালে ১০ লেখা ছিল আর মাহফুজের কপালে ৯।  হয়ত এর পরের ভিক্টিমের কপালে ৮।  এর মানে দাড়াচ্ছে ৮,৭,৬,৫,৪,৩,২,১ সিরিয়ালগুলো লিখে সাইকো টা হয়ত আরো ৮ টা এরকম মা*র্ডার করবে৷ মানে অলরেডি আরো ৮ জন তার টার্গেটে আছে। 
-আহ জাহাঙ্গীর, তুমি ত চমকে দিলে আমাকে।(কিছুটা আশ্চর্য হয়ে) এই কেসটা সলভ হোক,  তোমার প্রমোশনের জন্য আমি নিজে সুপারিশ করবো।  তোমার ভাবনার সাথে আমি একমত না হয়ে পারছি না।তবে এখন আমি কিভাবে যে পরিস্থিতি সামাল দিবো তাই বুঝে উঠতে পারছি না।  খু*নি কোনরকম ক্লু রেখে যাচ্ছে না। 
-চিন্তা করবেন না স্যার,  অপরাধী যত চালাকই হোক না কেন কোন না কোন ভুল করবেই।  
-কিন্তু আমাদের ত অপেক্ষা করলে চলবে না,  সিরিয়াল ৮ এর খু*ন টা হওয়ার আগেই কিলার কে ধরতে হবে। উপর থেকেও অনেক চাপ আসছে আর মিডিয়ার বকবকানি ত আছেই।
কথা শেষ করে দুইজনই বাসায় চলে যায়৷ ইফতেখার আর জাহাঙ্গীর দুইজনের চোখের ঘুম,  খাওয়া দাওয়া কোনকিছুই ঠিকভাবে হচ্ছে না।  জনগণের বন্ধু হয়েও পুলিশ কিছু করতে পারছে না।কিলার যে মিশনে নেমেছে সে যদি সফল হয় তাহলে আরো ৮ জনকে যন্ত্রনাদায়ক মৃ*ত্যু বরন করতে হবে। 
পরদিন ভোর ৫ টায় জাহাঙ্গীরের ফোনে ইফতেখারের ঘুম ভাঙ্গে। আরেকটা মা*র্ডার। জাহাঙ্গীরের বিল্ডিংয়ের দুই বিল্ডিং পরেই মা*র্ডারটা হয়েছে। তবে যে খু*ন হয়েছে সে কোন সাধারণ ব্যাক্তি নয় বরং সে শহরের সবচেয়ে বড় বড় ব্যাবসায়ীদের একজন যার সাথে প্রশাসনিক অনেক বড় বড় লোকদের সাথে উঠা বসা আছে।  এমনকি ইফতেখারের খুব কাছের বন্ধুও বটে। দুই বন্ধুর পুরো পরিবার গত দুইদিন আগেও একসাথে লাঞ্চ করেছে।  লোকটার নাম আরাফাত।  তার বাবাও বেশ ক্ষমতাধর একজন লোক।  ইফতেখার ফোন পেয়ে বিলম্ব না করে দ্রুত উপস্থিত হলো ঘটনাস্থলে। পুরো বাড়ি কান্নার আওয়াজে ভারী হয়ে উঠেছে।  সাংবাদিক সহ উৎসুক জনতা ভীর করেছে।  যেহেতু সনামধন্য একজন ব্যাবসায়ী খু*ন হয়েছে নিঃসন্দেহে এটা সবচেয়ে তাজা খবর৷ ইফতেখার নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না।  প্রিয় বন্ধুর লা*শ দেখে কান্নায় লুটিয়ে পরল। ব্যাতিক্রম কোন মা*র্ডার না ঠিক আগের মতোই পুরো দেহ ক্ষত-বিক্ষত করে মা*রা হয়েছে।  পিঠে লেখা হয়েছে রিভেঞ্জ আর কপালে লেখা হয়েছে 8। জাহাঙ্গীরের ধারনাই সঠিক হলো।  বন্ধু হওয়ার সুবাদে আরাফাতের চরিত্রের ব্যাপারে যথেষ্ট ধারনা ছিল ইফতেখারের। 
একের পর এক সিরিয়াললি খু*ন পুরো শহরবাসীকে  আতঙ্কিত করে তুলেছে। সাইকোপ্যাথের ব্যাপারটাকে  হাইলাইট করে মিডিয়াগুলো নিউজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। পরের খু*নটা কে কোথায় হবে কেও জানেনা।কিলার কাদেরকে টার্গেট করে মা*রছে তা মিডিয়ার কাছে পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়। সেই সাথে পুরো শহরবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়।  কেও কোন অপ্রিতিকর কিছু দেখলে যেন তা পুলিশ কে ইনফর্ম করে সেটাও বলা হয়। এদিন রাতেই কি*লার কোন একটা সংবাদ মাধ্যমকে তার অডিওক্লিপ পাঠায়।  যেখানে কিলার বলছে " প্রিয় শহরবাসী কেমন আছেন আপনারা,  আপনারা ভয় পাবেন না। আমি যাদেরকে মারছি তারা কেও ই মানুষের কাতারে পরে না।  আইন তাদের বিচার করতে পারেনি তাই আমি নিজ হাতে আইন তুলে নিয়েছি। যাদেরকে মা*রছি তারা হয় ধ*র্ষক ছিল অথবা প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েদের সর্বস্ব ভোগ করেছে।  কথা দিচ্ছি আমার লিস্টে যারা আছে তারা কেও বাচঁবে না। সবাইকে ম*রতে হবে। এবার আসি পুলিশ প্রশাসনের  কাছে।  ওরা আমাকে ধরতে পারবে না।  ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় হোক আশা করছি আমার মিশন কম্প্লিট করতে তারা আমাকে সাহায্য করবে।  এই শহরের মানুষরূপী পশুগুলো বেচে থাকলে আমার বোনেরা নিরপদ থাকবে না।  আমাকে ধরার চেষ্টা করে লাভ নেই।  আমি আমার মিশন কম্প্লিট করবোই। তাতে আপনারা আমাকে সাইকোপ্যাথ, পা*গল বা যা ইচ্ছা ভাবতে পারেন। খোদা হাফেজ।"
ইফতেখার ভেবেছিল এই  ভয়েসের সূত্র ধরে হয়ত কিলারের কাছাকাছি পৌছানো যাবে কিন্তু সে চেষ্টা নিতান্তই বৃথা হয় কারণ কি*লার কোন একটা অ্যাপ ব্যাবহার করে ভয়েস নকল করেছে।  আর সোর্সের ও কোন হদিস পাওয়া যায়নি। কি*লারের এই বাক্যগুলো ছড়িয়ে পরেছে পুরো মিডিয়া পাড়ায়।  
 এর মধ্যে আবার সাংবাদিক রা তিল কে তাল বানিয়ে প্রচার করছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বড় বড় অফিস পর্যন্ত সব জায়গায় এই কি*লার কে নিয়ে চলছে আলোচনা পর্যালোচনা।  কেও কথা বলছেন কি*লারের পক্ষে আবার কেও বিপক্ষে।  অনেকে বাহবা দিচ্ছেন এই বলে যে পুলিশ প্রশাসন যা করতে পারছে না তা একজন দায়িত্ব নিয়ে করছে।  মানুষের এমন বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় প্রশাসনের যেন টাল-মাটাল অবস্থা।  যুবক বয়সী অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছে এই ভেবে যে হয়ত সে কি*লারের নেক্সট টার্গেট। কিছু লোক থানায় এসে নিজের অপরাধ শিকার করে জেলে বন্দী থাকতে চাচ্ছে যেন তারা নিরাপদে থাকে৷ ইফতেখার আপাদত তাদের মামলা না দিয়ে জেলে ঢুকিয়েছে।  আর অন্য একজন অফিসারকে বলেছে তাদের চার্জশীট তৈরী করতে।সব ডিটেইলস শোনার পর জানা গেল এদের মধ্যে কেও ধ*র্ষণ করেছে বহুবার, আবার কেও কেও প্রেমের নামে অনেক মেয়েদের সাথে প্রতারণা করেছে। মিডিয়ায় ভ*য়ংকর হত্যাগুলো দেখে নিজেদের দোষ শিকার করে ধরা দিতে এসেছে। কি*লার ধরা পরলে হয়ত রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যাবহার করে ছাড়া পাবে এমনটাই চিন্তা করেছে বোধহয়।
  সমাজের নারীবাদীরা হাইলি সাপোর্ট দিচ্ছে অজ্ঞ্যাত এই কি*লারকে৷  দফায় দফায় মিটিং করছে বসছে পুলিশ প্রশাসন।  দায়িত্বরত ইফতেখারের দিকেও আঙ্গুল তুলছে অনেকেই।  সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু নেক্সট ভিকটিম।   কে জানে আর কার কার ভাগ্যে লেখা আছে এই সাইকোপ্যাথের চরম নির্যাতন আর অস্বাভাবিক মৃ*ত্যু। 
 সন্দেহ প্রবন কিছু মানুষকে থানায় ধরে এনে জিজ্ঞেসাবাদ করছে ইফতেখার।  তবে মানুষগুলো কথায় নিরিহ নিরিহ ভাব আছে।  যেন বেকার তাদেরকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে। এমন সময় ইফতেখারের ফোনে একটা নোটিফিকেশনের আওয়াজ পাওয়া গেল।  অপরিচিত একটা ইমেইল এড্রেস থেকে একটা ইমেইল পাঠানো হয়েছে।  যেখানে লেখা  "স্যার,  আমি একজন সাংবাদিক।  ঐ সাইকো কি*লার সম্পর্কে সকল তথ্য,  ডকুমেন্টস আমার কাছে আছে৷  আমি আপনাকে দিতে চাই সবকিছু। আর আরেকটা কথা স্যার,  আর কারো সাথে শেয়ার করবেন না এই কথাটা৷ ঐ সাইকোটা আমার ব্যাপারে সব জেনে গেছে। ওদের পুরো গ্রুপ আমাকে খুঁজছে মা*রার জন্য। আপনার ডিপার্টমেন্টের কাওকেও বলবেন না প্লিজ।  আপনার  ডিপার্টমেন্টের কেও একজন সম্ভবত সাইকোটাকে হেল্প করছে।  যার কারণে আপনারা এতদিন ওর কাছে পৌঁছাতে পারেননি। আপনি দেরি না করে এখনই নিউমার্কেটের নির্মানাধীন ২২ তলা বিল্ডিংয়ের ১৬ তম তলায় চলে আসুন। আমি এখানেই লুকিয়ে আছি । প্লিজ খেয়াল রাখবেন তথ্য টা যেন অন্য কেও জানতে না পারে। " 
 জাহাঙ্গীর একটু আগেই থানা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। ওর স্ত্রী নাকি গুরুতর অসুস্থ।  তা না হলে জাহাঙ্গীর কে সাথে নেওয়া যেতো।  যাইহোক কাল বিলম্ব না করে ইফতেখার একাই তার বাইকটা নিয়ে বের হলো। সজোরে বাইক চালিয়ে যত দ্রুত সম্ভব উপস্থিত হলো নিউমার্কেটে।  যে ভবনটার কথা সাংবাকি ফোনে বলেছিল তার ৪র্থ তলা পর্যন্ত শপিংমল আর বাকিটুকু নির্মানাধীন৷  শুধু ছাদ ঢালাই দেওয়া হয়েছে বাকী ১৯ তলা।  কোন একটা কারণে হয়ত আপাদত নির্মান কাজ বন্ধ রয়েছে। ইফতেখার দ্রুত গতিতে উপরে উঠতে লাগল।  সিঁড়ি বেয়ে ১৬ তলা উঠা সহজ ব্যাপার না।  তবে ইফতেখারের যেন কোন কষ্টই হচ্ছেনা কারণ সে হয়ত সফলতার খুব কাছাকাছি আছে। সাংবাদিকদের থেকে তথ্যগুলো নিয়ে খুব শীগ্রই হয়ত কেসটা ক্লোজ করবে। কিন্তু এত নির্জন একটা জায়গায় লোকটা কেন ডাকল তাও আবার ইফতেখারকে একা তা  একবার ও মাথায় আসেনি ইফতেখারের।  ইফতেখার ১৬ তম তলায় উপস্থিত। ইফতেখার বেশ ক্লান্ত। কেও একজন এক গ্লাস পানি ইফতেখারের দিকে এগিয়ে দিলো।  এসময়ে হয়ত এক গ্লাস পানির চাহিদাটাই সবচেয়ে বেশি ছিল তাই পানিটা কে দিচ্ছে  তাও খেয়াল করেনি ইফতেখার। পানি পান করে লম্বা লম্বা সস্থির নিশ্বাস ফেলতে থাকল ইফতেখার। সামনে একটা লোক দাড়িয়ে।  পুরো মুখ মাংকি ক্যাপে ঢাকা শুধু চোখ জোড়া দেখা যাচ্ছে। ইফতেখার ভাবছে হয়ত গোপনীয়তা রক্ষার্থে নিজেকে আড়াল করতে চাচ্ছে। 
চলবে........
কি মনে হচ্ছে হত্যাকরী কি এবার ধরা পড়বে? নাকি এবারও ঘটনা নতুনদিকে মোর নিবে?
আচ্ছা এখন ভিকটিম যদি ইফতেখার নিজেই হয় ঘটনাটা কেমন দাড়াবে?
লেখকঃ খালিদ সাইফুল্লাহ

🔴 Steps to Get Link 🔗

Click Ad

1. Click on Ad ⬆
2. Wait for 5 seconds
3. Come Back Here

Ad Clicked! Please wait 5 seconds...


--------